QR Code কি? কিভাবে বানাবো এবং রিড করবো?


কিউআর কোড, কিউআর কোড, কিউআর কোড! চারদিকে কেবল কিউআর কোড দেখি। কিন্তু এই জিনিসটা আবার কি? এই জামানায় নতুন নাকি?

কিউআর কোড হলো অনেকটা বারকোডের মতোই, কিন্তু বারকোড না, এবং বারকোড থেকে অনেক গুন বেশি উন্নত। এই কিউআর কোডের পুর্নরূপ হলো কুইক রেস্পন্স কোড। যে কোড খুব দ্রুত রেস্পন্স করে?! আসলেই তাই!

বারকোড আমরা প্রায় সকল প্রোডাক্টেই দেখতে পাই। এই বারকোড উদ্ভাবন করেন নরম্যান জোসেফ উডল্যান্ড, যার পেটেন্ট স্বীকৃতি তিনি পান ১৯৫২ সালে। ইভেন আমি এখন যে ল্যাপটপে বসে এই ব্লগটি লিখছি এবং ভিডিওটি এডিট করেছি সেটি উল্টালেও আমাকে একটা বারকোডের সম্মুখিন হতে হবে যাতে আমার ল্যাপটপটির সিরিয়াল নম্বর দেয়া আছে যা আমার ওয়ারেন্টি নিশ্চিত করে।

বারকোডের বেশকিছু ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে যার মধ্যে প্রচলিত হলো ইউপিসি(UPC) স্ট্যান্ডার্ড। এই ইউপিসি স্ট্যান্ডার্ড সর্বোচ্চ ২০টি অ্যালফা নিউম্যারিক অক্ষর বা ক্যারেকটার ধারণ করতে পারে।

তো এতো বিশাল যায়গা নিয়ে মাত্র ২০টি অক্ষর! এতো যন্ত্রনা দেখি!




তাই ১৯৯৫ সালে জাপানে আবিস্কৃত হয় কিউআর কোড যা এখন অনেকটাই বারকোডের রিপ্লেস করে ফেলছে। জাপানে গাড়ী শিল্প যখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে তখন গাড়িতে ব্যাবহারের জন্য এই কিউআর কোড তৈরি করা হয় যদিও এখন তা প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যাবহার করা হচ্ছে।
আর এই কিউআর কোড ১০০০ বা তার কিছু বেশি অক্ষর বা অ্যালফা নিউম্যারিক ক্যারেকটার বা অক্ষর ধারণ করতে পারে! ধরতে গেলে বারকোডের থেকে প্রায় ৩৪০ গুন বেশি! অবাক করা না??

আবার বারকোডের থেকে কিউআর কোডের সুবিধাও অনেক বেশি।
এক, এতো স্কয়ার সাইজ, বারকোড আয়তাকার, তাই জায়গা লাগে তুলনামুলক কম। আর বারকোডের কোন অংশ ছিড়ে গেলে বা নস্ট হলে সেটা আর স্ক্যান করে কোড ডিকোড করা সম্ভব হয় না স্ক্যানারের পক্ষে। কারন স্ক্যানারের এতো বড় মাথা নেই।
আর কিউআর কোডের স্ক্যান করার জন্য কোনো স্পেশিফিক স্ক্যানার বা ডিভাইস দরকার পরে না। আমরা চাইলে আমাদের স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়েই কিউআর কোড এবং সেই বারকোড, উভয় স্ক্যান করতে পারবো, কারণ আমাদের স্মার্টফোন একটা শক্তিশালি কম্পিউটারও বটে যার একটা ব্রেইন রয়েছে। কিউআর কোডের কোনো অংশ নস্ট হলে বা ছিড়ে গেলে স্মার্টফোনের বা কম্পিউটারের কিউআর কোড স্ক্যানার সেটাকে রিট্রাইভ করতে পারে বা খুঁজে বের করতে পারে। এই সক্ষমতার কারন হলো একটি ইরর কারেকশন মেথড অথবা অ্যালগরিদম। এই কারেকশন ব্যাবহার করে নস্ট বা ঢেকে থাকা কিউআর কোড সহজেই ডিকোড করতে পারে স্মার্টফোন।

কিউআর কোডের ব্যাবহারের ক্ষেত্র রয়েছে প্রায় সবস্থানেই। আমাদের ভিজিটিং কার্ড, আইডি কার্ডে এখন ব্যাবহার করা হচ্ছে কিউআর কোড। এছাড়া পেমেন্ট মেথডে দোকানে অ্যাপে কোড স্ক্যান করে পন্যের মুল্য পরিশোধ করতে পারছি। এছাড়া পাবলিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে বর্তমানে ডেডিকেটেড কিউআর কোড স্ক্যান করে নিলেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে আমাদের ডিভাইস ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কানেক্ট হয়ে যায়।

কিউআর কোড স্ক্যান করার জন্য ওয়েবক্যাম সংযুক্ত ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে ব্রাউজারে প্রবেশ করে কিউআর কোড স্ক্যানার লিখে সার্চ করলেই বেশ কিছু কিউআর কোড রিডার অ্যাপ্লিকেশন খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া অফলাইনে কাজ করতে চাইলে এই ফ্রি সফটওয়ারটি ব্যাবহার করা যেতে পারে। এই সফটওয়ার টি ব্যাবহার করে আমরা স্ক্রিনে থাকা কোনো কিউয়ার কোড, ওয়েবক্যাম থেকে কিউআর কোড এমনকি ক্লিপবোর্ডে কপি করে রাখা ছবি থেকে কিউ আর কোড স্ক্যান করে নিতে পারবো। সফটওয়্যারটির লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম,
CodeTwo QR Code Scanner and Reader 
-

Post a Comment

0 Comments