সামনে প্রচুর প্রোজেক্টের আইডিয়া আছে আমার, যেখানে আমার কাজ করা হবে প্রচুর এলইডি নিয়েই।
প্রচুর এলইডি নিয়ে কাজ করতে আমার একসাথে অনেক এলইডি কেনার দরকার পরে। আর এই এলইডিগুলো সবগুলোর কালার কিংবা ব্রাইটনেস একরকম হয় না। একেকটা হয় একেকরকম। আবার কিছু থাকে নস্ট। এইগুলোকে চেক করে দেখার জন্য ব্যাটারি, মাল্টিমিটার কিংবা পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে বেশ সময় লেগে যায়। মাল্টিমিটারে হয়তো আমি বায়াস ভোল্টেজ দেখতে পারি, কিন্তু জ্বালিয়ে তো কালার চেক করে দেখতে পারি না।
তাই তৈরি করবো একটা ডিভাইস যেটা দিয়ে আমরা ২৫ ভোল্ট পর্যন্ত বায়াসের যেকোনো এলইডি জ্বালিয়ে চেক করে দেখতে পারবো এবং ভোল্টমিটারে আমরা আমাদের এলইডি-এর ভোল্টেজ দেখতে পারবো। কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।
এই প্রোজেক্টের জন্য দরকার হবে,
- একটা ভোল্টমিটার, আর এটা একটা ০-৩০ ভোল্ট রেঞ্জের ভোল্টমিটার।
- একটা XL6009 ভোল্টেজ বুস্টার মডিউল।
- একটা সুইচ।
- দুটো ১২০ ওহমের রিসিস্টর, চাইলে একটা ২৪০ ওহমের ব্যাবহার করা যেতে পারে। কাছাকাছি একটা ভ্যালুর হলেই হবে।
- একটা ব্যাটারি, আমি নিচ্ছি ১৮৬৫০ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সেল।
- আর এটাকে চার্জ করার জণ্য একটা TP4056 লিথিয়াম ব্যাটারি চার্জার মডিউল।
তো ব্যাসিক্যালি আমরা যেটা করবো, সেটা হলো আমাদের বুস্ট কনভার্টার মডিউল দিয়ে যতটুকু বেশি পারা যায় ভোল্টেজ বাড়িয়ে নেবো। তারপর একটা ভোল্টেজ ডিভাইডারের মাধ্যমে আমাদের এলইডি জ্বালানোর চেষ্টা করে দেখবো। এতে করে ভোল্টেজ ডিভাইডার তখনই কাজ করবে যখন আমাদের ডায়োডের বায়াস ভোল্টেজ পাবে।
তো শুরু করা যাক। প্রথমেই আসি ভোল্টমিটারে। আমরা নর্মালি যেসব ভোল্টমিটার কিনি, সেগুলোতে দুটো তার থাকে। পাওয়ার এবং সেন্সরের তার শর্ট করে দেয়া থাকে। যার কারনে মিটারে পাওয়ার দেয়া হলে সাথে সাথেই ভোল্টেজ দেখায়।
এইটা বন্ধ করে সেন্সরের তার আলাদা করার জন্য আমি শর্ট করে দেয়া সল্ডার উঠিয়ে ফেলবো। এবার এটাকে পাওয়ার দেয়া হলে জিরো ভোল্টেজ দেখাবে, কারন সেন্সরের তারে কোনো ভোল্টেজ ডিফারেন্স নেই।
ব্যাস, আমাদের ভোল্টমিটারে আর তেমন কোনো মডিফিকেশন করার নেই।
এবার আমরা ব্যাটারি এবং ব্যটারি চার্জার মডিউল সল্ডার করে নেবো। সল্ডার করে নেবার পর একটা ইউএসবি ক্যাবল দিয়ে চার্জ দিয়ে দেখি ঠিক করে কাজ করছে নাকি।
পুরো সার্কিটটা তৈরি করার জন্য নিচের এই সার্কিট ডায়াগ্রামটা ব্যাবহার করা যেতে পারে।
আপনারা হয়তো খেয়াল করলে দেখবেন আমি দুইটা রিসিস্টর ব্যাবহার করেছি। কারন আমার কাছে এক্স্যাক্ট ২২০ অহমের রিসিস্টর ছিলো না। তাই দুটো সিরিজ করে বাড়িয়ে নিয়েছি। আপনারা চাইলে পাওয়ার রিসিস্টর ব্যাবহার করতে পারেন।
সিরামিক পাওয়ার রিসিস্টর |
এবার দুইটা রিসিস্টর সিরিজে সল্ডার করে নিই যাতে করে আমাদের কাঙ্খিত রিসিস্ট্যান্সটা পাই। তারপর রিসিস্টর-এর একটা প্রান্তে ভোল্টমিটারের পজিটিভ তারটি লাগিয়ে সেটা এক্সএল৬০০৯ বুস্টারের আউটপুট পজিটিভে সল্ডার করে লাগিয়ে দিই। একইভাবে নেগেটিভ তারটিও লাগিয়ে নিই। এবার রিসিস্টরের আরেক প্রান্তে, যেখানে ভোল্টেজ ডিফারেন্স তৈরি হবে, সেখানে ভোল্টমিটারের সেন্সরপিনটি লাগিয়ে দিই।
এবার আমাদের টেস্টিং প্রোব দুটো বানাবো, বাজারে কিনতেও পাওয়া যায়, আমি বানিয়েই নিচ্ছি। দুটো স্ক্রু বা পেরেক দিয়েই তৈরি করা যায়। টেস্টিং প্রোবের পজিটিভ প্রান্ত রেসিস্টরের শেষ প্রান্তে এবং নেগেটিভটি বুস্টারের নেগেটিভে সল্ডার করে দিতে হবে। প্রোবগুলো একটু টেপ দিয়ে মুড়িয়ে নিই।
টেপ দিয়ে মুড়ে নিই সেন্সর প্রোব |
এবার টেস্ট করার আগে বুস্টারের ভোল্টেজটা বাড়িয়ে দেবো। সর্বোচ্চ ২৫ ভোল্ট পর্যন্ত, কারন আমার মিটার ৩০ ভোল্ট লিমিটের। এবার আমার একটা এলইডি টেস্ট করে দেখি এটা দিয়ে জ্বলে নাকি।
টেস্ট করার সময় জ্বলছে এলইডি |
এবার আর সার্কিটের কাজ নেই, যেহেতু কাজ করছে আমাদের টেস্টার, আমরা একটা বক্স তৈরি করতে পারি। এজন্য আর বিশেষ করে বলবো না, কারন বক্স সবাই যে যার মতো বানাতে পারে।
বানানো হচ্ছে বক্স |
ব্যাস, বক্স সহ ডিভাইজটা তৈরি একদম, আমরা একটু চেষ্টা করে দেখি কেমন সব এলইডি টেস্ট করা যায়। আর সাথে কি নমিনাল এলইডি কিংবা ডায়োডের ট্রিগার ভোল্টেজ দেখায় নাকি।
এবার এটার বাক্সের জন্য কিছু লোগো আর স্টিকার বানিয়ে নিয়ে প্রিন্ট করে বাক্সের উপরে লাগিয়ে দিই যাতে করে দেখতে আরোও ভালো লাগে এই কাজের ডিভাইসটি।
তৈরি হয়ে গেলো গ্যাজেটটি! |
ব্যাস! তৈরি হয়ে গেলো আমাদের এই গ্যাজেটটা! যেটা দিয়ে আমরা সহজেই ২৫ ভোল্ট পর্যন্ত যেকোনো ডায়োড টেস্ট করে দেখতে পারবো।
আজকে এই পর্যন্তই। সামনে দেখা হবে আরোও প্রজেক্ট নিয়ে। সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন আর লাইক দিয়ে ফেলুন আমার পেইজে, সেখানে আপনারা সরাসরি পাবেন আপডেট আমার পরের প্রজেক্টের! ততদিন ভালো থাকবেন, আর নতুন কিছু তৈরি করতে থাকুন। আল্লাহ্ হাফেয!
0 Comments